আপনার দ্বারাই সম্ভব
সবার জীবনের লক্ষ একটি, সেটি হচ্ছে সাফল্য। সাফল্যকে অর্জন করার জন্য দিতে হয় নানা পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় কয়জনই বা সাফল্য অর্জন করতে পারি? সাফল্য অর্জন থেকে বড় বিষয় হচ্ছে, কয়জনই বা পরীক্ষায় অংশগ্রহন করি? পরীক্ষায় যদি ব্যর্থ হই তাহলে লোকে কি বলবে, এর থেকে থাক ভাই আমাকে দ্বারা হবে না, এই ভেবে বসে থাকি।
আমরা কখনও চিন্তা করি না সাফল্য এবং ব্যর্থতা একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। ব্যর্থতা আমাদের জীবনে আসবেই। এটাই স্বাভাবিক। এই ব্যর্থতা থেকে কেউ শিক্ষা নেয়, কেউ হেরে যায়। কখনও ভাবি না যে, ব্যর্থ হলে লোকে কি বলবে এটা ভেবে বসে থাকাও যে বোকামি।
“Your time is limited
So, Don’t waste it
Living someone else’s life”
–Steve Jobs
লোকে কি বলবে?
সূর্যের আলোর বর্ণ একটি কিন্তু প্রিজম দিয়ে দেখলে সেটা সাতটি বর্ণ ধারন করে। ঠিক আমাদের কাজগুলো সাতজন লোক সাত রকম ভুল ধরবেই। লোকের দিকে না তাকিয়ে প্রিজম থেকে আমাদের এই শিক্ষা নেওয়া উচিত যে, কাজটি আমি সাত বার সাতভাবে করতে পারি। একবার না একবার সাফল্য লাভ করবই।
আমাদের সমাজে দুই রকম লোক খুঁজে পাওয়া যায়। কিছু লোক আমাদের কে সমর্থন করে, কিছু লোক আমাদের কাজের বিরোধিতা করে। যারা আমাদের সমর্থন করে তারা চায় আপনি যেন সাফল্য অর্জন করতে পারেন অপর দিকে যারা আপনার বিরোধিতা করে, আপনি যত মহৎ কাজই করুন না কেন তারা আপনাকে অবজ্ঞা করবেই। একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি পরিষ্কার করা যাক, ধরুন আপনি কোন পরীক্ষায় ফেল করেছেন তখন তারা বলবে তুমি তো ফেলই করবে, যখন পাশ করবেন তখন বলবে পাশইত করেছ।আবার যখন এ প্লাস পাবেন তখন বলবে অনেকেই তো এ প্লাস পেয়েছে।
তাই আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, লোকে কি বলবে, এই ভয় দূর করার ৫ টি অসাধারণ উপায়–
১) সিদ্ধান্তহীনতায় না ভোগা।
“I live my life for my own self-satisfaction & need not for others to judge.”
আমরা অন্যের চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করতে পারি না, কেননা তাদের চিন্তাভাবনার উপর আমাদের কোন প্রভাব নেই। আমাদের প্রভাব আছে শুধু আমাদের চিন্তাভাবনার উপর। তাই যাদের চিন্তাভাবনাগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসতে পারব না এটা ভেবে সময় নষ্ট না করে, আমি কি করতেছি সেটাই বড় মনে করা।
২) চিন্তাভাবনার পরিবর্জন করা।
আমাদের চিন্তা করার প্রয়োজন যে, আমরা কতটুকু সময় অন্যের ব্যাপারে নষ্ট করছি। আমাদের যেমন সময় নেই অন্যের বিষয় নিয়ে চিন্তা করার, ঠিক তেমনি অন্যেরও সময় নেই আপনার বিষয় নিয়ে চিন্তা করার। যদিও কেউ করেও, তা দিনে ৩/৪ বার ১০-১৫ সেকেন্ড সময়ের জন্য। এই অল্প সময়ে আপনার বিষয় নিয়ে কি বলল, সেটা ভেবে তো আপনি বসে থাকতে পারেন না।
৩) নিজের সুখের ভার নিজেকে নেওয়া।
নিজের সুখের ভার যেমন নিজেকে নিতে হবে ঠিক তেমনি নিজের দুঃখের ভারও নিজেকেই নিতে হবে। যখন ভাববেন লোকে কি বলবে, তখন আমাদের সুখ বা দুঃখের ভার অন্য জনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে।
৪) উদযাপন করা।
লোকে কি বলল, সেটা দূর করার অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে, কোন কিছুতে সাফল্য অর্জন করলে উদযাপন করা। সাফল্য ছোট বা বড় হোক না কেন।
৫) নেতিবাচক চিন্তা দূর করা।
লোকে যদি সমালোচনা করেই বসে। তাহলে তা,নেতিবাচক না মনে করে বরং নিন্দুকের করা সমালোচনা থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।
আমাকে দ্বারা কিছু হবে না।
“গর্তে পড়ে যাওয়া স্বাভাবিক কিন্তু গর্ত থেকে উঠতে না পারা হচ্ছে ব্যর্থতা ”
সমস্যা নেই এমন লোক পৃথিবীতে খুজে পাওয়া অনেক কঠিন। সেই সমস্যাগুলো মোকাবেলা আমাদের সাফল্য অর্জন করতে হয়। কিন্তু সমস্যা মোকাবেলা করতে গিয়ে যদি আমরা একবার মাত্র ব্যর্থ হয়ে যাই, তাহলেই মনে করি, ভাই আমাকে দ্বারা কিছু হবে না।
“It’s always seem impossible
Until it’s done.
— Nelson Mandela.
ভয় একটি নেতিবাচক আবেগ। যার অন্যতম একটি হলো কাল্পনিক প্রত্যাশাকে সত্য মনে করা। ভয় এমন একটি আচরণ যা আমরা শিখে আসি আমাদের পরিবার থেকে। একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি পরিষ্কার করছি, আপনার বয়স যখন এক বছর থাকে তখন একটি তেলাপোকা দেখলে তা ধরতে যান, হাতের কাছে পেলে মুখে দেওয়ার চেষ্টা করেন। সেই আপনি, বয়স যখন তিন/চার বছর হয় তখন ওই তেলাপোকাকেই ভয় পাচ্ছেন।
“মানুষের ভয় পাওয়ার ব্যাপারটাই একমাত্র ভয়ের! অন্য কিছু নয়।”
— ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট
যে আপনি, আপনার পিতার ৫০ কোটি শুত্রুাণুর মধ্যে বিজয়ী হয়ে আপনার মা’র গর্ভাশয়ে পৌঁছেছিলেন। সেই আপনি কেন আজ ভাবেন, আমার দ্বারা সম্ভব নয়?
আজ একটি কাজ করতে গিয়ে একবার ব্যর্থ হলেই আর কাজটি শেষ করার উদ্দীপনা থাকে না। কখনও ভাবি না ব্যর্থতার পরেই রয়েছে সাফল্য। ”Build Stomach for Failure ”. রাত শেষ হলে যেমন দিন আসে। ঠিক তেমনি পাকস্থলী যদি ব্যর্থতা দিয়ে পূরণ করতে পারি তাহলেই আমরা সাফল্যের মুখ দেখতে পারব। তাই এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
ব্যর্থতাকে ভয় না করে একের পর এক চেষ্টা করে যান, এক সময় না এক সময় সফলতা আসবেই।
আমি জানি, আপনাকে দ্বারাই সম্ভব।