বিস্ময়কর জৈব কম্পিউটার
——————————- মানবদেহের সবচেয়ে জটিল,রহস্যময় ও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে ব্রেন। মানব অস্তিত্বের সবকিছু ব্রেন দ্বারা পরিচালিত হলেও ব্রেন সম্পর্কে মানুষের ধারণা এখনও প্রাথমিক পর্যায়েই রয়ে গেছে। ব্রেন সম্পর্কিত জ্ঞান এবং মানুষেরর মাঝে ব্যবধান এক মহাসমুদ্রের।এই মহাসমুদ্র পাড়ি দিয়ে ব্রেন সম্পর্কিত পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান অর্থাৎ অাত্মজ্ঞান লাভ করতে পারলেই মানুষ ব্রেনকে ব্যবহার করতে পারবে পরিপূর্ণভাবে।এমঅাইটি -এর নিউরোসাইন্টিস্ট প্রফেসর ফ্রান্সিস স্মিথ এর ভাষায়,”মানুষ যদি অাবিষ্কার করতে পারে কেন সে
অনন্য,তাহলে নিশ্চয়ই সে নিজেকে ধ্বংসের পথো নিয়ে যাবেনা বরং এখনকার চেয়ে নিজেকে বেশি শ্রদ্ধা করবে।”
বিশ্বে প্রাণের সর্বশ্রেষ্ঠ বিকাশ বা অাশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে মানুষ নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে ব্রেনের কারনেই।মানু্ষের সকল চিন্তা চেতনার কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ব্রেন। মানুষের সকল উদ্ভাবনী দক্ষতার উৎস হচ্ছে ব্রেন। ব্রেনই মানুষকে প্রথম পাথরের অস্ত্র তৈরি করতে শিখিয়েছে। অার সেই ব্রেনের উত্তরসূরীরাই বানিয়েছে মহাশূন্যযান। মানুষ অতীতে যা করেছে, ভবিষ্যতে যা করবে তা এই ব্রেনেরই ফসল।ব্রেনই মানু্ষকে মানুষ বানিয়েছে। অাপনি যুক্তিবাদী ও বিজ্ঞানমনস্ক হলে অাপনাকেও মনশক্তিতে বিশ্বাসী হতে হবে। খ্যাতনামা মনীষীদের মত অাপনারও সম্ভাবনা অনন্ত। বিত্তবান বা ধনীদের মত অাপনিও অমূল্য সম্পদের মালিক। অার অাপনার এই অমূল্য সম্পদ হচ্ছে অাপনার মস্তিষ্ক। নিউরো সাইন্টিস্টরা বলেন, মানবমস্তিষ্ক সর্বাধুনিক কম্পিউটার(ক্রে-১) এর চেয়েও কমপক্ষে দশ লক্ষ গুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন। একটা বাস্তব উদাহরণ দেই তাহলে। একটা উন্নতমানের ল্যাপটপ কিনতে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকার প্রয়োজন।
এবার ভেবে দেখুন তো অাপনার ব্রেনের দাম কত দাঁড়াচ্ছে? ৫০০০ কোটি টাকা। হ্যা, অাপনি কমপক্ষে ৫০০০ কোটি টাকার সম্পদ অাপনার ঘাড়ের উপর বয়ে বেড়াচ্ছেন। এরপরও যদি অাপনি গরীব থাকেন,তাহলে অাপনার দারিদ্র্যের কারন অভাব নয়,অাপনার স্বভাব। কারন অাপনি ব্রেনের মাত্র ৪-৫% ব্যবহার করেছেন,যেখানে প্রতিভাবানরা-সফল ব্যক্তিরা করেছে ১০-১৫%। একটা প্রতীকী গল্প দিয়ে অাজকের লেখাটা শেষ করছি। একবার এক বাংলাদেশি ব্যক্তির ব্রেন ড্যামেজ হয়ে গেলো। ডাক্তারের পরামর্শ হলো,ব্রেনটা চেন্জ করতে হবে। রক্তেরর জন্যে যেমন ব্লাডব্যাংক থাকে,তেমনি ব্রেনের জন্যে অাছে ব্রেনব্যাংক। তো এবার ঐ ব্যক্তি ব্রেনব্যাংকে গিয়ে ব্রেন পছন্দ করতে লাগলো। অামেরিকান ব্রেন,জাপানি ব্রেন, চায়না ব্রেন, বাংলাদেশি ব্রেন। লোকটি খুব অবাক হলো বাংলাদেশের ব্রেনের সাথে অন্যান্য দেশের ব্রেনগুলোর দামের তারতম্য দেখে।
তিনি ঐ ব্রেনব্যাংকের ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস করেই ফেললেন,” অাশ্চর্য!!! বাংলাদেশের ব্রেনের দাম এত বেশি কেন?” উত্তরে ম্যানেজার সাহেব বললেন,”স্যার, অামেরিকান বা জাপানিজ ব্রেন নিয়ে অাপনার কোনো কাজেই অাসবেনা। কারন এরা এদের ব্রেনের অধিকাংশই খরচ করে ফেলেছে। অার ঐ যে চায়না ব্রেনটা দেখছেন না?ওটা নেয়ার তো প্রশ্নই অাসেনা। কারণ ওরা ওদের ব্রেনের প্রায় পুরোটাই খরচ করে ফেলেছে। কিন্তু স্যার বাংলাদেশের ব্রেনগুলো একদম ফ্রেশ, বাঙালিরা এর একটুও এখনো ব্যবহার করেনি। তাই স্যার বাংলাদেশের ব্রেনের দাম এত বেশি।”
…………………
Jasmin Akter
Facebook Comments