সিভি এবং রেজুমির মধ্যে পার্থক্য
শুধু ভাল চাকরি, ভাল স্কলারশিপের জন্য নয়, ভাল বিয়ের জন্যও প্রয়োজন কিছু ভাল ডকুমেন্ট। কাজের উপর ভিত্তি করে ডকুমেন্টগুলোকে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ডকুমেন্টগুলো হচ্ছে- রেজুমি, সিভি, বায়োডাটা এবং প্রোফাইল। কোন ধরনের ইনফরমেশন কোথায় লিখব তা নিয়ে রয়েছে আমাদের মাঝে অনেক সংশয়। সিভি, রেজুমি, বায়োডাটা এবং প্রোফাইল সম্পর্কে ভাল ধারনা না থাকার কারনে আমাদের এ ধরনের সমস্যার মুখোমুখী হতে হয়। তাই আজ আপনাদের সমস্যা দূর করার জন্য প্রত্যেকটিকে আলাদা আলাদাভাবে আলোচনা করব–
১)রেজুমি:
একটি ভাল চাকরির জন্য অবশ্যই একটি ভাল রেজুমির প্রয়োজন। আমরা অনেকই রেজুমি এবং সিভিকে একই মনে করি। আবার অনেকে মনে করে সিভি এবং রেজুমির মধ্যে পার্থক্য হলো একটিতে ছবি থাকবে আরেকটিতে থাকবে না। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা নয়। রেজুমি হচ্ছে সিভির “Snapshot “. রেজুমি আমরা সব কিছু সংক্ষিপ্ত ভাবে লিখব। সংক্ষিপ্ত হলেও ইনফরমেশনগুলো ( সফলতা, এচিভমেন্ট) হতে হবে অবশ্যই “SMART “. এখানে S= Specific, M= Measurable, A= Achievable, R= Reliable, T= Time Bound. রেজুমি আপনি আপনার ছবি ব্যবহার করবেন কি না, তা নির্ভর করবে আবেদন বিজ্ঞপ্তির উপর। কেননা, ছবি দেখে নেগেটিভ প্রভাবও বিস্তার করতে পারে। তাই আবেদন বিজ্ঞপ্তিতে ছবি দিতে বললে দিবেন ( অবশ্যই সেলফি তুলা পিকচার না) না বললে দেওয়ার দরকার নাই। রেজুমিতে অনেকেই ব্যক্তিগত ইনফরমেশন ( পিতার নাম, মাতার নাম, উচ্চতা, গায়ের রং) দিয়ে থাকে কিন্তু বুঝতে চেষ্টা করে না, কোম্পানি আমাকে দেখে নিয়োগ দিবে নাকি নিয়োগ দিবে আমার যোগ্যতা দেখে। এসব তথ্য আপনার বিবাহ কাজে ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু রেজুমিতে নয়। অবশ্যই মনে রাখবেন রেজুমি কখনও সাহিত্য চর্চার জায়গা নয়। ফ্রেশারদের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা দেখা যায় যে, তাদের কাজের অভিজ্ঞতা না থাকা। তাই অভিজ্ঞতা কে কভার করার জন্য ছাত্র অবস্থায় কিছু ট্রেনিং, ওয়ার্কশপ, ভলান্টিয়ার কাজ করা। অবশ্যই ফ্রেশারদের রেজুমির দৈর্ঘ ২ পাতার মধ্যেই শেষ করতে হবে, তবে কাজের অভিজ্ঞতা ৮-১০ বছর হলে ১ পাতা বাড়ানো যেতে পারে। ফ্রেশার অবস্থায় ২ জনের রেফারেন্স নিতে হবে, তবে এখানে একজন প্রফেসর আরেক জন ভাল পজিশনে চাকরিরত লোকের হলে ভাল হয়। ৮-১০ বছরের অভিজ্ঞতা হলে রেফারেন্সের কোন দরকার নেই।
২) সিভি:
সিভির ব্যবহার হয় প্রধানত একাডেমিক ক্ষেত্র। চাকরির জন্য ব্যবহার করি রেজুমি। সিভির ব্যবহার হয় একাডেমিক ক্ষেত্রে যেমন- আপনি কোন Phd, থিসিস বা স্কলারশিপের জন্য প্রোফেসরকে আপনার সিভি পাঠাবেন, তখন সেখানে আপনি বর্ণনা করবেন আপনি কোন কোন থিসিস পেপার, কোন রিসার্সে কাজ করেছেন, আপনার ইডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশন কি কি আছে। বর্ণনার ধরন হতে হবে অবশ্যই রেজুমির মত “SMART”.মনে রাখবেন আপনার শুধু ইনফরমেশনের উপর স্কলারশিপ নির্ভর করবে না, ইনফরমেশনগুলো কিভাবে সাজাবেন তার উপরও নির্ভর করে। সিভির দৈঘ্য হবে কমপক্ষে ২ পাতা।
৩) বায়োডাটা:
বায়োডাটা প্রধানত ব্যবহার করা হয় বিয়ের কাজে। এখানে আপনি আপনার পারসোনাল ইনফরমেশন যেমন: বাবার নাম, মায়ের নাম, চুলের রং, নাক কেমন, উচ্চতা, গায়ের রং, আপনার স্যালারি কত, কোন সেলিব্রটির সাথে ভাল সম্পর্ক আছে, আপনার বাবা কি করে, আপনি কি কি পছন্দ করেন ইত্যাদি। মোট কথা আপনার পারসোনাল ইনফরমেশনকে ফোকাস করাই হচ্ছে বায়োডাটার কাজ। আপনি আপনার পারসোনাল ইনফরমেশনগুলো রেজুমি নাকি বায়োডাটাতে দিবেন, আশা করি আমার থেকে আপনি অনেক ভাল বলতে পারবেন।
৪) প্রোফাইল :
প্রোফাইলটা আসলে সবার জন্য নয়। এটি ব্যবহার করে শুধু সেলিব্রেটি ব্যক্তিরা। প্রোফাইলে ফোকাস করা হয় আসলে আপনি কোন কাজের জন্য সবার মন জয় করেছেন। ইনফরমেশনগুলো হবে সেই “SMART” আকারে। এখানে বণর্না করতে হবে আরেকটু বৃহৎ আকারে।
পরবর্তী পর্বগুলোতে একে একে একটি ভাল রেজুমি, সিভি, বায়োডাটা বা প্রোফাইল কিভাবে লিখতে হয়; ফন্ট, বানান, মার্জিন স্টাইল কেমন হবে; সিভি কিলার এবং পাওয়ারফুল ওয়ার্ডগুলো কি কি তা নিয়ে আলোচনা করব।