স্বপ্ন ও সফলতা
Some people dream of success, while other people get up every morning and make it happen.
Wayne Huizenga
Success বা সফলতা
আমার মনে হয় সফলতা ও স্বপ্ন দুইটা খুবই কাছাকাছি দুইটা জিনিস। সফলতার মাধ্যমেই আমাদের স্বপ্ন পূরণ হয়। আবার এভাবেও বলতে পারি সফলতা আমাদের স্বপ্ন দেখতে শেখায়। মাঝে মাঝে ছোট ছোট সফলতা আমাদের বড় স্বপ্ন দেখতে সাহায্য করে। সাহায্য করে এগিয়ে যেতে। ছোট ছোট সফলতা কে যোগ করতে করতেই আমরা খুলতে পারি স্বপ্নের দোয়ার।
মানুষ মাত্রই স্বপ্ন দেখে। স্বপ্ন দেখে বড় হওয়ার । স্বপ্ন দেখে নিজের সীমানা অতিক্রম করার। আসলে স্বপ্ন দেখার মাধ্যমেই শুরু হয় কোন কাজের শুরু । যেমন আমি পাবলিক ভার্সিটিতে ভর্তি হব এটা আমার স্বপ্ন। আর এটা বাস্তবায়ন করতে আমাদের কাজ শুরু করতে হবে। তবেই স্বপ্ন পূরণ হবে।
তবে আমরা সবাই স্বপ্ন দেখলেও খুব কম মানুষই তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে । আর্জন করতে পারে সেই সফলতা, যার জন্য সে স্বপ্ন দেখেছে। এখন প্রশ্ন হল কেন সবার স্বপ্ন পূরণ হয় না??? কেন সবাই জীবনে সফলতা পায় না???
আমরা যদি একটু চিন্তা করি তাইলে বুঝতে পারবো সফলতা মূলত একটা ধারাবাহিক প্রচেষ্টা । ধারাবাহিক ভাবে যারা কাজ করতে পারে তারাই জীবনে সফল হতে পারে। পৃথিবীতে যত সফল ব্যাক্তি আছে তাদের দিকে তাকালেই আমরা বুঝতে পারি ধারাবাহিকতাই তাদের সফলতার মূল। কেন তারা সফল এই ব্যাপার গুলা যদি আমরা একটু পর্যালোচনা করি তাহলেই ব্যাপারটা বুঝতে পারবো।
প্রথমেই যেটা আমাদের দরকার সেটা হলো স্বপ্ন দেখলে সেটা আমাদের দেখার মত করে দেখতে হবে । সেই জায়গাতে আমাদের নিজেদেরকে বসিয়ে কল্পনা করতে হবে যেখানে আমরা পৌছাতে চাই। সেই দৃশ্যটা আমাদের সামনে যত পরিষ্কার হবে তত আমরা আমাদের স্বপ্নকে সত্যি করার শক্তি পাব । এজন্য আমাদের আগে স্বপ্নকে দেখতে হবে দেখার মত করে তবেই না তাকে লক্ষ্য বানিয়ে এগিয়ে যেতে পারব সামনের দিকে।
এর পরে যে বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো নিদিষ্ট সময় ঠিক করে নেয়া আর সেই অনুযায়ী সেটাকে ভাগ করে নেওয়া। যেমন ধরুন আমি IELTS এর পরীক্ষা দিতে চাই আর এর জন্য আমার প্রস্তুতি সময় আছে দশ মাস । এখন আমাকে দশ মাস পরে যেহেতু পরীক্ষার হলে বসতে হবে তাই আমার প্রস্তুতির জন্য আমাকে এই দশ মাসকে ভাগ করে নিতে হবে। প্রথম মাসে আমি WRITING এর উপর কাজ করব দ্বিতীয় মাসে আমি SPEAKING এর উপর কাজ করব। এভাবে আমি আমার হাতে যে দশ মাস আছে সেটা নিজের মত করে ভাগ করে নিলাম।
এর পরে যেটা আসে সেটা হলো নিয়মিত এই ব্যাপারটার উপর কাজ করা এবং নিদিষ্ট সময় ধরে কাজ করা। যেমন ধরুন আমি প্রথম মাসে WRITING এর উপর কাজ করব। এর জন্য আমি আমার প্রতিদিনের রুটিনে WRITING এর জন্য আলাদা করে সময় রাখবো সেটা যে কোন সময় হতে পারে। আমি আমার নিজের মত করে সেটা ঠিক করব। সেটা হতে পারে আমি ঘুমানোর আগে রোজ এক ঘণ্টা নতুন ব্যাপার নিয়ে প্যারাগ্রাফ লিখবো এর মাধ্যমে বা সকালে ঘুম থেকে উঠে। এটা নির্ভর করবে নিজ নিজ সময় মেইনটেইনের উপর।
এর পর যে ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা নিজ নিজ মেন্টালিটির মানুষকে খুঁজে বের করা আর তাদের সাথে সেই ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করা। আমরা অনেক এই ব্যাপারটা করি না। আমরা যেটা নিয়ে কাজ করতে চাই সেটা অন্যকে জানাতে চাই না বা লজ্জা বোধ করি। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য গুলো অন্যের কাছে শেয়ার করি তাহলে সেই লক্ষ্য অর্জন করতে আমরা অনেক সাহায্য পেতে পারি। তবে এক্ষেত্রে আপনার লক্ষ্যের সাথে যাদের লক্ষ্য মিলে তাদের সাথে আলোচনা করলে বেশী সাহায্য ও মেন্টাল সাপোর্ট পাওয়া যায়।
নিজেকে পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখা। যেমন ধরুন আমার হাতে প্রিপারেশন এর জন্য যে দশ মাস সময় ছিল তার প্রথম চার মাস আমি WRITING, LISTENING, SPEAKING, READING এর জন্য কাজ করলাম। এখন চার মাস পর আমি দেখবো যে আমার কি কি উন্নতি হয়েছে, কোন কোন জায়গাতে আমার দূর্বলতা আছে, কোন কোন জায়গাতে আমাকে আরো বেশী সময় দিতে হবে। আবার সেই অনুযায়ী আমাকে সামনের যে সময়টা আছে তা ভাগ করে নিতে হবে । তবে এক্ষেত্রে আমাদের একজন মেন্টন বা কোচ রাখলে ব্যাপারটা অনেক সহজ হয়। সেই মেন্টর বা কোচ যে কেউই হতে পারে। সে হতে পারে আপনার কাছের বন্ধু, কাছের বড় ভাই, আপনার মা – বাবা বা যে কোন শুভাকাঙ্ক্ষী যারা আপনাকে সব সময় পর্যবেক্ষণ করতে পারে।
শেষে যে ব্যপারটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো নিজেই নিজেকে পুরষ্কিত করা। ছোট ছোট সাফল্য কে উৎযাপন করা। যেমন ধরুন আপনি প্রথম মাসে WRITING এর উপর কাজ করলেন এবং মাস শেষে দেখা গেলো আমি যে কোন টপিকের উপর সহজেই লিখতে পারছেন। তো এখানে যে আপনার উন্নতিটা হলো এর জন্য একদিন বাইরে কোথাও খেতে গেলেন, নতুন কিছু একটা কিনে ফেললেন । মনে রাখবেন এই সব ছোট ছোট পুরষ্কার আপনাকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দিবে।
শেষে Wayne Huizenga কথাটা আরেকবার বলতে চাই
” স্বপ্ন সবাই দেখে কিন্তু যারা নিয়মিত চর্চা করে তারাই কেবল সেটাকে বাস্তবে রুপ দিতে পারে “
Facebook Comments